আজাদীর কন্ঠ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা ও চলমান আগ্রাসন এবং নারী-শিশুসহ লক্ষ্য লক্ষ্য নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী হরতালের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃত্বে কুষ্টিয়া জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে স্মরণকালের এক বৃহত্তম বিক্ষোভ মিছিল,সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি।সোমবার সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া ইসলামি কলেজ মাঠ প্রাঙ্গন থেকে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচির সূচনা হয়। ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জিএম তাওহীদ আনোয়ারের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ গ্রহন করেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস,জামায়াতে ইসলামী, কুষ্টিয়া জেলা ইমাম পরিষদ, বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ সাধারন জনতা। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বক চত্বর, ৪রাস্তার মোড়, ৫ রাস্তার মোড়, শাপলা চত্বর, মজমপুর, সাদ্দাম বাজার,উপজেলা মোড় সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌড়হাস মোড়ে ২ ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে চলমান সমাবেশে গণহত্যার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলার সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুলতান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুষ্টিয়া জেলাট সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতিফ খান,কুষ্টিয়া জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া শহর আমীর এনামুল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুস্তাফিজুর রহমান,জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক তালহা, আল-খিদমাহ্ সামাজিক সংস্থার সভাপতি মুহাম্মদ হৃদয় প্রমুখ। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কর্মসূচি বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বক্তারা বলেন, “ফিলিস্তিনে আমাদের নিরীহ ভাই-বোনদের উপর চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে জেগে উঠতে হবে। এই বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না। বক্তারা জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, জাতিসংঘ আজ অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে। এ জাতিসংঘের নীরবতা আমরা মানি না। বক্তারা অবিলম্বে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে বলেন, “যতদিন না এই গণহত্যা বন্ধ হচ্ছে, ততদিন ইসরাইলি পণ্যের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে।” এছাড়াও বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশকে সাহায্যের হাত এবং রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা দেওয়ার আহবান জানান বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়া জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও মুসলিম জনতা।
সমাবেশের শেষ পর্যায়ে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলার সেক্রেটারি জিএম তাওহীদ আনোয়ার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করে বলেন,ফিলিস্তিনে গাজাবাসীর আহবানে হরতালের সমর্থনে কুষ্টিয়ার আজকের মিছিলে যারা সংক্ষিপ্ত সময়ের প্রচার ও দাওয়াতে উপস্থিত হয়েছেন এবং যে সকল রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনসমূহ ডাকে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ একটি কর্মসূচি পালন করতে সহযোগিতা করলেন, সকলকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ্য থেকে শুভেচ্ছা। মুসলিম উম্মাহের জন্য আমরা এক ও অভিন্ন। আমাদের পরিচয় আমরা মুসলমান।আমরা ইসলামি সৈনিক।
বক্তব্য শেষে জিএম তাওহীদ আনোয়ার বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশের পক্ষ্য থেকে সর্বশেষ ৪দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
(৪ দফা কর্মসূচি)
১/ অবিলম্বে সকল ইজরায়েলী/ইহুদীবাদি প্রতিনিধিত্বকারী সকল পন্য রাষ্ট্রীয় ভাবে আমদানি বন্ধ করতে হবে।
২/ কুষ্টিয়া সহ সারা দেশের শহর/মহল্লা/গ্রামের প্রতিটি দোকানে ইজরায়েলি পন্য পরিপূর্ণভাবে বিক্রয় বন্ধ করতে হবে।
৩/ প্রতিটি দোকানে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে ইজরায়েলের পন্য বিক্রয় বন্ধ করার ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৪/ দল-মত নির্বিশেষে প্রতিটি রাজনৈতিক দল/সংগঠন উন্মুক্তভাবে ফিলিস্তিনের ভাইদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।
সর্বোপরি দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি (ছদর) আলহাজ্ব মাওলানা নুর মোহাম্মদ বিন হানিফ।